=MY MOTHER EARTH- TAKE MY LAST SALUTATION=
=MY MOTHER EARTH- TAKE MY LAST SALUTATION=
[My last
Salutation, and comments on how you appeared before me]
[3RD
POEM OF "PATRAPUT"* BOOK OF VERSE-1935]
.....................
আজ আমার প্রাণতি গ্রহণ কারো , পৃথিবী ,
শেষ নমস্কারে অবনত দিবাবসানের বেদীতলে।
মহাবীর্যবতী, তুমি বীরভোগ্যা ,
বিপরীত তুমি লালিতে কঠোরে ,
মিশ্রিত তোমার প্রকৃতি পুরুষে নারীতে ;
মানুষের জীবন দোলায়িত কারো তুমি দুঃসহ দ্বন্দ্বে।
ডান হাতে পূর্ণ কারো সুধা
বাম হাতে চূর্ণ কারো পাত্র ,
তোমার লীলাক্ষেত্র মুখরিত কারো অট্টবিদ্রূপে ;
দুঃসাধ্য কারো বীরের জীবনকে মহৎজীবনে যার অধিকার।
শ্রেয়কে কারো দুর্মূল্য ,
কৃপা কারো না কৃপাপাত্রকে।
তোমার গাছে গাছে প্রচ্ছন্ন রেখেছো প্রতিমুহূর্তের সংগ্রাম ,
ফলে শস্যে তার জয়মাল্য হয় সার্থক।
জলে স্থলে তোমার ক্ষমাহীন রানারঙ্গভূমি ,
সেখানে মৃত্যুর মুখে ঘোষিত হয় বিজয়ী প্রাণের জয়বার্তা।
তোমার নির্দয়তার ভিত্তিতে উঠেছে সভ্যতার জয়তোরণ ,
ত্রূটি ঘটলে তার পূর্ণ মূল্য শোধ হয় বিনাশে।
তোমার ইতিহাসের আদিপর্বে দানবের প্রতাপ ছিল দুর্জয় ,
সে পরুষ, সে বর্বর , সে মূঢ়।
তার আঙ্গুলি ছিল স্থুল , কলাকৌশলবর্জিত ;
গদা-হাতে মুষল-হাতে লণ্ডভড করেছে সে সমুদ্র পর্বত ;
অগ্নিতে বাষ্পেতে দুঃস্বপ্ন ঘুলিয়ে তুলেছে আকাশ।
জড়-রাজত্বে সে ছিল একাধিপতি ,
প্রাণের 'পরে ছিল তার অন্ধ ঈর্ষা।
দেবতা এলেন পরযুগে -
মন্ত্র পড়লেন দানব-দমনের ,
জড়ের ঔদ্ধত্য হলো অভিভূত ;
জীবধাত্রী বসলেন শ্যামল আস্তরণ পেতে।
উষা দাঁড়ালেন পূর্বাচলের শিখরচূড়ায় ,
পশ্চিমসাগরতীরে সন্ধ্যা নামলেন মাথায় নিয়ে শান্তিঘট।
নম্র হলো শিকলে-বাঁধা দানব ,
তবু সেই আদিম বর্বর আঁকড়ে রইল তোমার ইতিহাস।
ব্যবস্থার মধ্যে সে হঠাৎ আনে বিশৃঙ্খলতা ,
তোমার স্বভাবের কালো গর্ত থেকে
হঠাৎ বেরিয়ে আসে এঁকেবেঁকে।
তোমার নাড়িতে লেগে আছে তার পাগলামি।
দেবতার মন্ত্র উঠছে আকাশে বাতাসে অরণ্যে
দিনে রাত্রে
উদাত্ত অনুদাত্ত মন্ত্রস্বরে।
তবু তোমার বক্ষের পাতাল থেকে আধপোষা নাগদানব
ক্ষণে ক্ষণে উঠছে ফণা তুলে ,
তার তাড়নায় তোমার আপন জীবকে করছ আঘাত ,
ছারখার করছ আপন সৃষ্টিকে।
শুভে অশুভে স্থাপিত তোমার পাদপীঠে ,
তোমার প্রচন্ড সুন্দর মহিমার উদ্দেশে
আজ রেখে যাব আমার ক্ষতচিহ্নলাঞ্ছিত জীবনের প্রণতি।
বিরাট প্রাণের , বিরাট মৃত্যুর গুপ্তসঞ্চার
তোমার যে মাটির তলায়
তাকে আজ স্পর্শ করি, উপলব্ধি করি সর্ব দেহে মনে।
অগণিত যুগযুগান্তরের
অসংখ্য মানুষের লুপ্ত দেহ পুঞ্জিত তার তলায়।
আমিও রেখে যাব কে মুষ্টি ধূলি
আমার সমস্ত সুখদুঃখের শেষ পরিণাম ,
রেখে যাব এই নামগ্রাসী, আকারগ্রাসী , সকল-পরিচয়-গ্রাসী
নিঃশব্দ মহাধূলিরাশির মধ্যে।
অচল অবরোধে আবদ্ধ পৃথিবী , মেঘলোকে উধাও পৃথিবী ,
গিরিশৃঙ্গমালার মহৎ মৌনে ধ্যানমগ্না পৃথিবী ,
নীলাম্বুরাশির অতন্দ্রতরঙ্গে কলমন্দ্রমুখরা পৃথিবী ,
অন্নপূর্ণা তুমি সুন্দরী , আন্নরিক্তা তুমি ভীষণা।
এক দিকে আপক্বধান্যভারনম্র তোমার শস্যক্ষেত্ৰ ,
সেখানে প্রসন্ন প্রভাতসূর্য প্রতিদিন মুছে নেয় শিশিরবিন্দু
কিরণ-উত্তরীয় বুলিয়ে দিয়ে ।
অস্তগামী সূর্য শ্যাম শস্য হিল্লোলে রেখে যায় অকথিত এই বাণী -
" আমি আনন্দিত " ।
অন্য দিকে তোমার জলহীন ফলহীন আতঙ্ক পান্ডুর মরুক্ষেত্রে
পরিকীর্ণ পশুকঙ্কালের মধ্যে মরীচিকার প্রেতনৃত্য।
বৈশাখে দেখেছি বিদ্যুৎচঞ্চুবিদ্ধ দিগন্তকে ছিনিয়ে নিতে এল
কালো সেনপাখির মতো তোমার ঝড় ,
সমস্ত আকাশটা ডেকে উঠলো যেন কেশর-ফোলা সিংহ,
তার লেজের ঝাপটে ডালপালা আলুথালু করে
হতাশ বনস্পতি ধুলায় পারলো উবুড় হয়ে।
হওয়ার মুখে ছুটল ভাঙা কুঁড়ের চাল
শিকল-ছেঁড়া কয়েদি-ডাকাতের মতো।
আবার ফাল্গুনে দেখেছি তোমার তপ্ত দক্ষিনে হাওয়া
ছড়িয়ে দিয়েছে বিরহমিলনের স্বগতপ্রলাপ
আম্রমুকুলের গন্ধে।
চাঁদের পেয়ালা ছাপিয়ে দিয়ে উপচিয়ে পড়েছে
স্বর্গীয় মদের ফেনা।
বনের মর্মরধ্বনি বাতাসের স্পর্ধায় ধৈর্য হারিয়েছে
অকস্মাৎ কাল্লোলোচ্ছাসে ।
স্নিগ্ধ তুমি, হিংস্র তুমি, পুরাতনী , তুমি নিত্যনবীনা ,
অনাদি সৃষ্টির যজ্ঞহুতাগ্নি থেকে বেরিয়ে এসেছিলে
সংখ্যাগণনার অতীত প্রত্যুষে ,
তোমার চক্রতীর্থের পথে পথে,
ছাড়িয়ে এসেছ
শত শত ভাঙা ইতিহাসের অর্থলুপ্ত অবশেষ-
বিনা বেদনায় বিছিয়ে এসেছ তোমার বর্জিত সৃষ্টি
অগণ্য বিস্মৃতির স্তরে স্তরে।
জীবপালিনী , আমাদের পুষেছ
তোমার খন্ডাকালের ছোটো ছোট পিঞ্জরে।
তারই মধ্যে সব খেলার সীমা ,
সব কীর্তির অবসান।
আজ আমি কোনো মহা নিয়ে আসিনি তোমার সম্মুখে ,
এতদিন যে দিনরাত্রির মালা গেঁথেছি বসে বসে
তার জন্যে অমরতার দাবি করব না তোমার দ্বারে।
তোমার অযুত নিযুত বৎসর সূর্যপ্রদক্ষিণের পথে
যে বিপুল নিমেষগুলি উন্মীলিত নিমীলিত হতে থাকে
তারই এক ক্ষুদ্র অংশে কোনো একটি আসনের
সত্যমূল্য যদি দিয়ে থাকি ,
জীবনের কোনো একটি ফলবান খন্ডকে
যদি জয় করে থাকি পারম দুঃখে
তবে দিয়ো তোমার মাটির ফোঁটার একটি তিলক আমার কপালে ;
সে চিহ্ন যাবে মিলিয়ে
যে রাত্রে সকল চিহ্ন পারলাম অচিনের মধ্যে যায় মিশে।
হে উদাসীন পৃথিবী ,
আমাকে সম্পূর্ণ ভোলার আগে
তোমার নির্মম পদপ্রান্তে
আজ রেখে যাই আমার প্রাণতি।
....................................................
Composed by Tagore on : 16th October-1935, Shantiniketan [INDIA],
Translated by Sukumar Das [ Dated the 31st March-2020]-Kolkata.
Comments
Post a Comment